ঘুষ ছাড়া কোনো কাজ হয় না – শিক্ষাবার্তা ডট কম

শিক্ষাবার্তা ডেস্কঃ ঘুষ ছাড়া কোনো কাজ হয় না চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে। একটি মাত্র সাব-রেজিস্ট্রি এই অফিসে প্রতিদিন লক্ষাধিক টাকার ঘুষের লেনদেন হয়।
কেউ এই ঘুষের প্রতিবাদ করলে তার আর রেজিস্ট্রির কাজ হয় না বরং তাকে হেনস্তার শিকার হতে হয়। প্রতিদিন বায়না নামা, অংশনামা, হেবা, দানপত্রে সরকারি কোনো ফি না থাকলেও এসব করতে গেলেই জায়গার মৌজার দামের শতকরা ২ ভাগ ঘুষ দিতে হয় অফিসে। এ ছাড়াও রেজিস্ট্রিতেও সরকারি ফির সঙ্গে জমির মৌজা মূল্যের শতকরা ২ ভাগ দিতে হয়। অন্যথায় দলিল রেজিস্ট্রি হয় না। ঘুষের টাকা আদায়ের বিশেষ দায়িত্বে লাঠিয়াল হিসেবে রয়েছে নওশেদ আলম চৌধুরী।
লোহাগাড়া সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের দলিল লেখক মুজিবুর রহমান বলেন, লোহাগাড়া সাব-রেজিস্ট্রি অফিস থেকে প্রতি মাসে ৫০ থেকে ৬০ হাজার নওশেদ আলম চৌধুরীকে দেওয়া হয়।
তিনি আরও বলেন, ২০১৮ সাল থেকে নওশেদ মিয়া লোহাগাড়া দলিল লেখক সমিতির স্ব-ঘোষিত সভাপতি। তার ভয়ে কেউ নতুন করে সমিতির সভাপতি হতে চান না।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নওশেদ মিয়ার কাছে লোহাগাড়ার সব দলিল লেখকগণ জিম্মি। কারণ নওশেদ আলম চৌধুরী ২০১৬ সাল থেকে নিজেকে লোহাগাড়া দলিল লেখক সমিতির সভাপতি হিসেবে ঘোষণা দেন। এখনো সেই পদে তিনি স্ব-ইচ্ছায় বহাল রয়েছেন। কেউ তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার সাহস করে না। কারণ নওশেদ আলম লোহাগাড়ার ত্রাস হিসেবে পরিচিত। তার বিরুদ্ধে ২টি হত্যা, ১টি ডাকাতি ও এমনকি পুলিশের ওপর হামলার মামলাও রয়েছে।
একাধিক ভুক্তভোগী নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন, সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে ঘুষ দিতে কেউ অপারগতা প্রকাশ করলে তাতে নওশেদ আলম চৌধুরী হস্তক্ষেপ করেন। তার ভয়ে কেউ আর প্রতিবাদ করার সাহস করে না। তার এসব অপকর্মের কারণে দলিল লেখকদের মাঝে চরম অসন্তোষ থাকলেও কেউ প্রতিবাদ করার সাহস করে না।
সাব-রেজিস্ট্রার মোহাম্মদ ইসমাইল হোসেন বলেন, আমি নতুন যোগদান করেছি। ঘুষ নেওয়া বা নওশেদ মিয়াকে টাকা দেওয়ার ব্যাপারে তিনি কিছু জানেন না বলে জানিয়েছেন।
নওশেদ আলম চৌধুরীর সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি নিজে থেকে সভাপতি হইনি বরং আমাকে তাদের দরকার তাই তারা আমাকে সভাপতি করেছে।
এ ছাড়া সাব-রেজিস্ট্রি অফিস থেকে কোনো টাকা নেন না বলেও জানান তিনি।
শিক্ষাবার্তা ডট কম/এএইচএম/০১/০২/২৩